বিশ্বকাপে ভরাডুবি – ৮ উইকেটের বিশাল হার বাংলাদেশের

বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ। পঞ্চাশ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৫ রান।

অন্যান্য ম্যাচের মতো টপ অর্ডারে ব্যর্থতার পর স্কোর যে ২৫০ এর আশেপাশে এসেছে, এতেই খুশি ছিলো বাংলাদেশ। লিটন দাসের জন্মদিন থাকায় ওনার একেবারেই ইচ্ছে ছিলো না, অন্তত আজকে ব্যাটিং করার। সেইজন্য, তিনি ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হয়েছেন। জন্মদিন বলে কথা!!!

দুনিয়ার সবাই জানে, নতুন বলে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের স্টাম্পে বল করেন ট্রেন্ট বোল্ট। বল যেখানেই পিচ করুক না কেন, ইনসুইং হয়ে বল ভেতরে ঢুকবেই, যদি এলবিডব্লিউ হয়…এই আরকি। তাছাড়া, ট্রেন্ট বোল্ট যখন এই স্পটে বল করেন, ডিপ ফাইন লেগে একজন ফিল্ডার সবসময় থাকে। বুদ্ধিমান লিটন দাস এই সুযোগ শতভাগ কাজে লাগিয়েছেন। বলটা উড়িয়ে মেরে ডিপ ফাইন লেগে ফেললেন ম্যাট হেনরির হাতে। ব্যস, ঝামেলা শেষ।

নিউজিল্যান্ডের বোলাররা যে খুব বেশী টাইট বোলিং করেছেন, ব্যাপারটা মোটেও তা নয়। এমনকি, চেন্নাইয়ের পিচ ছিলো ক্রিকেটের জন্য রেগুলার পিচ। খুব বেশী বাড়তি সুবিধা অন্তত এই ধরনের পিচ থেকে আদায় সম্ভব নয়।

by Star Sports

বাংলাদেশের স্কোয়াডে থাকা বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ ৪৬ বলে ৩০ রান, সাকিব আল হাসান ৫১ বলে ৪০ রান, মুশফিকুর রহিম ৭৫ বলে ৬৬ রান করেছেন। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৯ বলে ৪১ রানের একটি অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। একেবারে শেষ সময়ে এই রান না হলে, বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যেত ২০০ রানের আশেপাশে।

কারণ, দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা অত্যন্ত ধারবাহিকতার সাথেই তাদের পারফরম্যান্স ধরে রেখেছেন। ওপেনার তানজিদ হাসান ১৭ বলে ১৬ রান, নাজমুল হাসান শান্ত ৮ বলে ৭ রান এবং তাওহীদ হৃদয় ২৫ বলে ১৩ রান করে ফিরে গিয়েছেন। তাদের কোনোভাবেই ইচ্ছে হয়নি, মাঠে কিছু বেশী সময় আজকে থাকি, একটু দায়িত্ব নিয়ে ক্রিকেট খেলি।

নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ট্রেন্ট বোল্ট ৪৫ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন। আরেক পেইসার ম্যাট হেনরিও নিয়েছেন ২টি উইকেট। লকি ফার্গুসন ৪৯ রানে ৩টি উইকেট নিয়ে হয়ে উঠেছিলেন ম্যাচের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী।

২৪৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমেছিলেন দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে এবং রচিন রবিন্দ্র। দলীয় মাত্র ১২ রানে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান রচিন রবীন্দ্র। উইকেটে কেইন উইলিয়ামসন এসে কনওয়ের সাথে গড়ে তুললেন ৮০ রানের একটি পার্টনারশিপ। দলীয় ৯২ রানে সাকিব আল হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হন ডেভন কনওয়ে। ততক্ষণে তিনি ৫৯ বল থেকে ৪৫ রান করে ফেলেছেন।

কনওয়ের বিদায়ের পর কেইন উইলিয়ামসন এবং ড্যারেল মিচেল মিলে বাংলাদেশ দলের উপর রোলার চালিয়েছেন বলা চলে। ১০৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছেন এই দুইজন ব্যাটসম্যান। আঙ্গুলের ইঞ্জুরির কারণে কেইন উইলিয়ামসন ফিরে না গেলে এরাই হয়তো টার্গেট পূরণ করে ফেলতো।

কেইন উইলিয়ামসন ১০৭ বলে ৭৮ এবং ড্যারেল মিচেল ৬৭ বলে ৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।

by Star Sports

শেষ পর্যন্ত ৪২ ওভার ৫ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ২৪৮ রান তুলতে সক্ষম হয় নিউজিল্যান্ড। এই বিশাল ব্যবধানে জিতলেও মন খারাপ নিউজিল্যান্ডের। দলের অন্যতম ভরসার জায়গা এবং দলের ক্যাপ্টেন কেইন উইলিয়ামসন পরবর্তী ম্যাচে ফিরবেন কিনা এখনও নিশ্চিত নয় তারা। যে ইঞ্জুরির কারণে বিশ্বকাপের শেষ মুহুর্তে দলে ফিরেছিলেন উইলিয়ামসন, সেই ইঞ্জুরিতে তিনি আবারও পরলেন কিনা…প্রশ্ন থেকেই গেলো।

বিস্তারিত ভিডিওতে…

You Might Also Like

Leave a Reply